শনিবার, ২৫ মে ২০২৪, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন

অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অব্যাহত থাকলে রোগ সারানোর ওষুধ মিলবে না

অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অব্যাহত থাকলে রোগ সারানোর ওষুধ মিলবে না

স্বদেশ ডেস্ক:

জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। যথেচ্ছ ব্যবহারে জীবাণুর বিরুদ্ধে উপকারী অ্যান্টিবায়োটিক আর আগের মতো কাজ করছে না। দামি দামি অ্যান্টিবায়োটিকের কর্মক্ষমতা কমে ৫০ শতাংশের নিচে চলে এসেছে। যেভাবে ব্যবহার হচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে রোগ থেকে মানুষকে সারিয়ে তুলতে আর নতুন কোনো ওষুধ পাওয়া যাবে না। গতকাল রোগতত্ত্ব রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) ‘অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল সারভেইলেন্সের ফলাফল’ বিষয়ক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এভাবেই হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা: আব্দুল আজিজ। বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা। সারভেইলেন্সের ফলাফল তুলে ধরেন ডা: জাকির হোসেন হাবিব। আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইকেল এস ফ্রিডম্যান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টেকনিক্যাল অফিসার ড. মুহাম্মদ ইসমাইল রামজি।

সারভেইলেন্সের ফলাফলে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে যাওয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে এক কোটি মানুষ মারা যাবে ওষুধ না পেয়ে। এর মধ্যে কেবল ক্যান্সারেই মারা যাবে ৮২ লাখ, কলেরায় মারা যাবে এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার, ডায়াবেটিসে মারা যাবে ১৫ লাখ, ডায়রিয়ায় মারা যাবে এক লাখ ৪০ হাজার, হামে মারা যাবে এক লাখ ৩০ হাজার, রোড অ্যাক্সিডেন্টে এক লাখ ২০ হাজার এবং টিটেনাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে ৬০ হাজার মানুষ।

দিন যত যাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক শেষ হয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ এই ১০ বছরে ৪২টি অ্যান্টিবায়োটিক এলেও ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে মাত্র এসেছে ২১টি। ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে এসেছে মাত্র ছয়টি এবং ২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মাত্র ৯টি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক এসেছে।

২০১৭ থেকে ২০১৯ সালর মধ্যে ১৪ হাজার ৬৬৯টি স্যাম্পল পরীক্ষা করে আইইডিসিআর ১০টি পরিচিত জীবাণুর অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ক্ষমতা (রেসিস্টট্যান্ট) গড়ে তুলেছে। ফলাফলে সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধী পাওয়া গেছে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে। এই বিভাগে অ্যান্টিবায়োটিক ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তুলেছে। অপর দিকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ১১ শতাংশ এবং আইসিইউতে ১১ শতাংশ করে প্রতিরোধী হয়ে গেছে। অন্যান্য বিভাগে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে গেছে ১২ শতাংশ।

অ্যান্টিবায়োটিক পুরুষের বিরুদ্ধে ৪৭ শতাংশ এবং নারীর বিরুদ্ধে ৫৩ শতাংশ প্রতিরোধী হয়ে গেছে। সবচেয়ে প্রতিরোধী হয়েছে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের বিরুদ্ধে ২২ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৩ শতাংশ প্রতিরোধী হয়েছে। ০ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১১ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক প্রেিতরাধী পাওয়া গেছে। ১৬ শতাংশ প্রতিরোধী হয়েছে ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের বিরুদ্ধে। ১৪ শতাংশ ৪১ থেকে ৫০ শতাংশ বয়সী, ১২ শতাংশ ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৮ শতাংশ, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৩ শতাংশ এবং ৮১ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ১ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী পাওয়া গেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877